Sunday, December 17, 2017

ভাষা প্রসঙ্গে-২

ভাষার জগতে ভাষার ব্যবহারপদ্ধতি তথা ব্যকরনে স্থিততাবাদি যাদের মিম করে বলা হয় grammar nazi তাদের সাথে ব্যকরনে পরিবর্তনবাদি যারা ভাষার বিবর্তনের পক্ষে ও তা চায়, তাদের কড়া যুদ্ধ ছিলো ও আছে। স্থিততাবাদিদের যুক্তি হচ্ছে যে স্টার ট্রেক ও ম্যাস ইফেক্টের সিরিজে যেরকমটি দেখাতো কয়েক পর্বে যে কোনো কোনো প্রজাতি অতিদ্রুতগতিতে তাদের ভাষা পরিবর্তন করতো বলে মানুষসহ অন্যান্য জাতির পক্ষে তাদের সাথে যোগাযোগ অনেক কঠিন হতো, সেরকম দৃশ্য বাস্তবের মানবজাতির মধ্যে এড়ানোর জন্য ভাষা নিয়ন্ত্রনের এক কেন্দ্রীয় আধিপত্য বা সরকার দরকার যে নতুন কোনো পরিবর্তন আনবার একমাত্র অধিকার রাখবে ভাষার উপরে। পরিবর্তনবাদিদের যুক্তি হচ্ছে এই পদ্ধতি অনেক ধীর। তবে এগুলোই দুইপক্ষের একমাত্র যুক্তি নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে ব্যবহৃত যুক্তি, অন্যান্যর তুলনায়। মানুষ ভাষা আবিষ্কারের পরে মনের ভাব পরিবহন অনেকাংশে সহজ হয় কিন্তু সেখানে সমস্যা থেকে যায় যে অপরজনকে বারবার এক কথা বলে মনে করিয়ে রাখাটা সমস্যা, বিশেষ করে যদি যিনি কথা মনে করিয়ে দিতে চায়, তিনি যদি জীবিত না থাকে। এজন্য মানবজাতি বুদ্ধিতে বের করলো ছবি চিহ্ন দেখানোর মাধ্যমে মনের ভাব বিনিময় ও সে ছবি চিহ্ন কোনো জায়গাতে তৈরি করে সংরক্ষন করে রাখা। তার ফলে তৈরি হলো প্রথম Writing system যার অংশ হলোHieroglyphics Sign language । তারপরে চিহ্ন লিখার মাধ্যম হিসাবে বিভিন্ন জিনিসের উপরে পরীক্ষা চালানোর ফলে Egyptian Civilization এর লোকরা আবিষ্কার করলো যে Papyrus গাছের রস ও ছাল থেকে কেমন একটা জিনিস তৈরি করা যায় যার উপরে চিহ্ন সহজে দেওয়া যায়, মুছে না সহজে আবার খুব কঠিন না মুছা। তৈরি হলো প্রথম paper. তার পরে মানুষ দেখলো যে বারবার হাতে করে লিখা ও খোদাই করা একটা কঠিন কাজ, চেষ্টা চললো কাজটা স্বয়ংকৃয় করার, Johannes Gutenberg আবিষ্কার করে ফেললো Printing Press, ফলে শিক্ষনজগতের বড় বিস্তার ঘটলো স্বয়ংকৃয় ছাপাতে গনহারে বই বিস্তারের ফলে। বিংশ শতাব্দীর দিকে যখন কম্পিউটার আবিষ্কার হলো, প্রথম কম্পিউটারগুলোতে প্রতিটা প্রোগ্রাম নিজে কোড করে প্রতিবার চালাতে হতো, কোনো সেভ করার অপশন না থাকায় বারবার কোড করতে হতো, চরম ঝামেলা, কম্পিউটার সাইন্সের ছেলেমেয়েরা ভালোমত বুঝে সেভ করতে না পারার ঝামেলা। Jon von Neumann আবিষ্কার করলো Automata theory এর সে অংশগুলো যেগুলোর ফলে কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষন এবং স্বয়ংকৃয় পুনর্লিপি তথা copying সম্ভব হলো। সেটা এবং Ascii System নামক কোড সিসটেম যেখানে কমপিউটারের বাইনারি সিগনালকে ইংলিশ লেখার অক্ষরে প্রদর্শনী করা যায় স্কৃনে, এই দুইটার ফলে ভাষা ও প্রকাশনের খাত অনেক বড় একটা বিস্তার লাভ করলো যার ফলে আজকে আমরা মেমোরি কার্ডে টেরাবাইট পরিমান লেখা জমা করে রাখতে পারছি ও প্রয়োজনে চালু করতে পারছি যেকোনো কমপিউটারে।

এই লেখাতে দেখানো হয়েছে যে ভাষাতে বিবর্তনের পক্ষীয় হলে যে বোধগম্য কথ্য ভাষা অবোধগম্যতে পরিনত হতে পারে তা এবং তার সাথে দেখানো হয়েছে যে তথ্যকে সবচেয়ে সংক্ষেপে সবচেয়ে বেশি প্রচার করানোর জন্য যতরকমের প্রচারনা ও সংরক্ষনচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।

No comments:

Post a Comment