Wednesday, October 18, 2017

নাস্তিক দিয়ে নাস্তিক কোপানো সমাচার

https://www.facebook.com/nahida.akhter.1426/posts/175085133035252

এই পোস্টটা এখন দেখার আগে নাহিদার সাথে ইনবক্সে যে আলাপটা হয় সেটা করার পরে পোস্টটা দেখে বুঝলাম যে এখন ইস্যুটা নিয়ে একটা পাবলিক এলার্ট পোস্ট করা দরকার তাই আজকে নাহিদার সাথে যা কথা হলো, সেটা এবং গত ৬ বছর ধরে আমি যা বলে এসেছিলাম সেটা প্রকাশ করা দরকার জনসম্মুখে। যা হয় হোক কারন আদর্শ থেকে পিছু হটা আমার আদর্শ না।
ঘটনা হচ্ছে যে নাস্তিকতা বিজ্ঞানবাদ দর্শন জীবনধরন ধর্ম প্রভৃতি "জ্ঞানের শাখা" বিস্তারের জগতটা যেটাকে অনেকে দেখে মনে করতো "কি সুন্দর বই পড়ুয়া জ্ঞানী লোকজন সুন্দর আচরন হবে" বলে মনে করতো, সেটা আসলে আন্তর্জাতিক রাজনীতির জগত এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিভিন্ন খাতের মধ্যে ভয়ংকরতম এটা, the intelligence sector. ফেসবুক তৈরির বহু, বহু বছর আগে, ৮০ এর দশকের ইউজনেট আমল থেকে, বিভিন্ন জ্ঞান তথ্য আদর্শের ব্যাপারে বিতর্ক যেগুলো চলতো নেটে, সেগুলোতে দেশি ও বিদেশি একাধিক সরকার ও বেসরকারি গ্রুপ ও ব্যক্তিত্ব জড়িত আছে একাধিক লক্ষ্য নিয়ে এবং তাদের মধ্যকার "emperor vs king war" এর অংশে টাকা দিয়ে পেইড সৈন্যের বাইরে "বোকা চেংড়া পোলাপান" ভাড়া করে যাদেরকে মনে করানো হয় যে আপনি যেটার জন্য লড়ছেন সেটাই সঠিক এবং ওটা ধ্বংস হয়ে গেলে the whole universe is going to die (ভেজিটার ভয়েস হবে এখানে)। জিনিসটাতে আন্তর্জাতিক গ্রুপগুলোর বড় রকমের আগ্রহ তৈরি হয় ৯৮ এর ওকলাহোমা বোমা হামলা ও ৯৯ এর কলামবাইন শুটিং এর পরে যখন তারা দেখে যে খুনি হামলাকারীরা নেট জগত থেকে অনুপ্রানিত এবং নেটে কি কি ধরনের লিখা ইংলিশে লিখা হতো। বাংলাভাষীদের জগতে ইন্টারনেটে প্রথম দিকের ব্যবহারকারীগুলো জামাতপন্থি ইসলামি (জামাত গ্রুপকে অন্য মুসলিম গ্রুপরা দেখতে পারেনা, হেফাজত ইসলাম জামাতের mortal enemy) হওয়ায় তাদের দখল বড় আকারে আসে প্রথম দিকগুলোতে, যেটার একটা বড় ধাক্কা আসে ২০১১ সালে আমেরিকার কয়েকটা জায়গাতে ইসলামিক রায়ট বাজানোর চেষ্টা করে ছাগুরা, যে ছাগুদের "আদর" করার মাধ্যমে জানা যায় যে তারা ইসলামি ছাত্রশিবির ও জামাতের বাংলা লেখা দিয়ে অনুপ্রানিত, বাংলাভাষি মুসলিমরা শিবিরের কথাগুলো ইংলিশে অনুবাদ করে অন্যকিছু মডারেট ছাগুদের কড়া বানিয়ে রায়টিং। সেটা আমেরিকার আমর্ড ফোর্সের এক অংশকে আগ্রহি করে আমাদের ভাষার ছাগুদের প্রতি এবং এক কান থেকে এক কান হয়ে পেনটাগন পর্যন্ত যায় বাংলাভাষী ছাগুদের ছ্যাংড়ামি। ছ্যাংড়ামির উপরে নজরদারি ও প্রতিরোধবাহিনি মানে resistance force এর ঝাল আরো শক্তিশালি হয় ২০১৭ সালে প্যারাডকসিকাল সাজিদ স্ক্যান্ডালের পরে, যেটা নিয়ে পশচিমে এই ছাগুরা হামলা করতে গিয়েছিলো বিভিন্ন এলাকাতে।
ছাগুরা এরকম করতে পারে ও করেছে। নাস্তিক ব্লগাররা কি তা করতে পারে? উত্তর হ্যা, পারতো এবং এখনো পারে। কিভাবে? একেক ব্লগারের একেক আদর্শ আছে এবং সে আদর্শ তারা পুরো মাল্টিভার্স মানে যত ইউনিভার্স আছে, সবগুলোতে কায়েম করতে চায়। দেবাশীষ ও সৌরভদের আন্তর্জাতিকতাবাদ দেখুন, তারা চায় বরডার নাই করে সব উন্মুক্ত করে দিতে। উন্মুক্ত বর্ডার নিয়ে stormfront , above top secret প্রমুখ ফোরামে পক্ষবিপক্ষ তর্ক থেকে অস্ত্রহাতে রায়ট হয়েছে, ২০১০ থেকে ১২ তে। পৃথিবীতে একাধিক যে রাষ্ট্র, একেকজনের একেক ইন্টারেস্ট এবং একই জিনিস এক দেশ চায়, আরেকদেশ ঠেকাতে চায়। চাওয়া ও ঠেক চাওয়া, দুই পক্ষই তাদের সম্পদ ব্যবহার করেছে ও করছে প্রচুর পরিমানে সৈন্য তৈরি করতে যা দিয়ে তারা অপরপক্ষকে নাই করে দিবে এবং এ কাজে hollow point bullet সহকারে পিস্তল নিয়ে যুদ্ধে লোক পাঠানোর চেষ্টা করে, যদি তা না পারে, তবে খালি হাতে। ছবিরহাট থাকা অবস্থায় ছবিরহাটের মারামারিগুলো বড় উদাহরন, আজিজ মার্কেটে চাকু হাতে "কবি" "লেখক"দের মারামারি দ্রষ্টব্য। এখন একেকজনের একেক আদর্শগত মারামারিতে আদর্শের ভিন্নতার জায়গা থেকে যারা আজকে নাহিদাকে নিয়ে গালিগালাজ করছে, কাল নাহিদা তার পারিবারিক ক্ষমতা (নাহিদা যে পুলিশকে ঠান্ডা করাতে সক্ষম ফোন দিয়ে, সেটা নিয়ে তার পোস্ট দ্রষ্টব্য) ব্যবহার করে সেসব গালিগালাজকারী কিংবা হামলাকারী বিরোধিদের ঠান্ডা করতে সক্ষম এবং ইচ্ছুক কিনা, সেটা আরেক প্রশ্ন। কথা হচ্ছে, there are some others similar to nahida akhter. not that i am against it, ব্লগ ও লেখালেখির জগতে আইন ও অস্ত্রবাজি দিয়ে বিপরীত আদর্শকে ঠেকানোর পক্ষে বহু আগে থেকে কথা বলা লোকদের একজন আমি নিজে। এই জিনিসটা বড় চিন্তার জায়গা এবং আমি ভবিষ্যতের সবাইকে সতর্ক করে দিতে এই পোস্টটা দিয়েছি যে যারা আদর্শপ্রচারের জগতে ঢুকতে চায়, তারা যেনো CIA, Mi6, NSI, MSS এবং এসবের বাইরে বেসরকারি যত ব্যক্তি ও গ্রুপ আছে ক্ষমতার সাথে জড়িত, তাদের সাথে হয় ফাইট করার ক্ষমতা অথবা ডিল করে বেচে থাকার ক্ষমতাটা অর্জন করে যেনো অন্তত ঢুকে কারন আমি নিজেসহ প্রায় সবাই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কিছু মাত্রাতে হলেও জড়িত হয়ে পড়েছে কারন ওয়াচ রাখা হয় বিভিন্ন গ্রুপ থেকে যে অজ পাড়াগার কার পোস্টে ডালাস টেকসাসে আগুন জ্বলতে পারে।
those people doing বদনামি about you? they are involved in the politics. it is mafia and military politics of the highest level and interest.

Tuesday, October 17, 2017

প্যারাডকসিকাল সাজিদের জবাব-৭

পেরা সাজিদ ৭ নাম্বার চেপটারের জবাব। সবার কাছে চ্যালেঞ্জ এর চেয়ে উন্নততর জবাব তৈরির।
//বেশ লোভনীয় শিরোনাম।শারীরিক ক্লান্তি ভুলেই আমি ঘটনাটির প্রথম থেকে পড়া শুরু করলাম।ঘটনাটি সাজিদের ডায়েরিতে যেভাবে লেখা, ঠিক সেভাবেই আমি পাঠকদের জন্য তুলে ধরছি-
‘কয়েকদিন আগে ক্লাশের থার্ড পিরিয়ডে মফিজুর রহমান স্যার এসে আমাকে দাঁড় করালেন।বললেন,- ‘তুমি ভাগ্যে,আই মিন তাকদিরে বিশ্বাস করো?’
আমি আচমকা অবাক হলাম। আসলে এই আলাপগুলো হলো ধর্মীয় আলাপ। মাইক্রোবায়োলজির একজন শিক্ষক যখন ক্লাশে এসে এসব জিজ্ঞেস করেন, তখন খানিকটা বিব্রত বোধ করাই স্বাভাবিক। স্যার আমার উত্তরের আশায় আমার মুখের দিকে চেয়ে আছেন।
আমি বললাম,- ‘জ্বি, স্যার।এ্যাজ এ্যা মুসলিম, আমি তাকদিরে বিশ্বাস করি।এটি আমার ঈমানের মূল সাতটি বিষয়ের মধ্যে একটি।’
স্যার বললেন,- ‘তুমি কি বিশ্বাস করো যে, মানুষ জীবনে যা যা করবে তার সবকিছুই তার জন্মের অনেক অনেক বছর আগে তার তাকদিরে লিখে দেওয়া হয়েছে?’
– ‘জ্বি স্যার’- আমি উত্তর দিলাম।
– ‘বলা হয়, স্রষ্টার ইচ্ছা ছাড়া গাছের একটি ক্ষুদ্র পাতাও নড়েনা, তাই না?’
– ‘জ্বি স্যার।’
– ‘ধরো, আজ সকালে আমি একজন লোককে খুন করলাম। এটা কি আমার তাকদিরে পূর্ব নির্ধারিত ছিলো না?’
– ‘জ্বি, ছিলো।’
– ‘আমার তাকদির যখন লেখা হচ্ছিলো, তখন কি আমি জীবিত ছিলাম?’
– ‘না, ছিলেন না।’
– ‘আমার তাকদির কে লিখেছে? বা, কার নির্দেশে লিখিত হয়েছে?’
– ‘স্রষ্টার।’
– ‘তাহলে, সোজা এবং সরল লজিক এটাই বলে- ‘আজ সকালে যে খুনটি আমি করেছি, সেটি মূলত আমি করি নি।আমি এখানে একটি রোবট মাত্র।আমার ভেতরে একটি প্রোগ্রাম সেট করে দিয়েছেন স্রষ্টা।সেই প্রোগ্রামে লেখা ছিলো যে, আজ সকালে আমি একজন লোককে খুন করবো।সুতরাং, আমি ঠিক তাই-ই করেছি, যা আমার জন্য স্রষ্টা পূর্বে ঠিক করে রেখেছেন।এতে আমার কোন হাত নেই।ডু ইউ এগ্রি,সাজিদ?’
– ‘কিছুটা’- আমি উত্তর দিলাম।
স্যার এবার হাসলেন।হেসে বললেন,- ‘আমি জানতাম তুমি কিছুটাই একমত হবে,পুরোটা নয়।এখন তুমি আমাকে নিশ্চই যুক্তি দেখিয়ে বলবে,- স্যার, স্রষ্টা আমাদের একটি স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন।আমরা এটা দিয়ে ভালো-মন্দ বিচার করে চলি,রাইট?’
– ‘জ্বি স্যার।’
– ‘কিন্তু সাজিদ, এটা খুবই লেইম লজিক,ইউ নো? ধরো, আমি তোমার হাতে বাজারের একটি লিষ্ট দিলাম।লিষ্টে যা যা কিনতে হবে, তার সবকিছু লেখা আছে।এখন তুমি বাজার করে ফিরলে।তুমি ঠিক তাই তাই কিনলে যা আমি লিষ্টে লিখে দিয়েছি।এবং তুমি এটা করতে বাধ্য।’
এতটুকু বলে স্যার আমার কাছে জানতে চাইলেন,- ‘বুঝতে পারছো?’
আমি বললাম,- ‘জ্বি স্যার।’
– ‘ভেরি গুড! ধরো, তুমি বাজার করে আসার পর, একজন জিজ্ঞেস করলো, সাজিদ কি কি বাজার করেছো? তখন আমি উত্তর দিলাম,- ‘ওর যা যা খেতে মন চেয়েছে, তা-ই তা-ই কিনেছে। বলতো, আমি সত্য বলেছি কিনা?’
আমি বললাম,- ‘নাহ, আপনি মিথ্যা বলেছেন।’
স্যার চিৎকার করে বলে উঠলেন,- ‘এক্সাক্টলি। ইউ হ্যাভ গট দ্য পয়েণ্ট,মাই ডিয়ার।আমি মিথ্যা বলেছি।আমি লিষ্টে বলেই দিয়েছি তোমাকে কি কি কিনতে হবে।তুমি ঠিক তা-ই তা-ই কিনেছো যা আমি কিনতে বলেছি।যা কিনেছো সব আমার পছন্দের জিনিস। এখন আমি যদি বলি,- ‘ওর যা যা খেতে মন চেয়েছে,সে তা-ই তা-ই কিনেছে’, তাহলে এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা,না?’
– ‘জ্বি,স্যার।’
– ‘ঠিক স্রষ্টাও এভাবে মিথ্যা বলেছেন।দুই নাম্বারি করেছেন। তিনি অনেক আগে আমাদের তাকদির লিখে তা আমাদের গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন।এখন
আমরা সেটাই করি, যা স্রষ্টা সেখানে লিখে রেখেছেন।আবার, এ্যাট দ্য এন্ড অফ দ্য ডে, এই কাজের জন্য কেউ জান্নাতে যাচ্ছে, কেউ জাহান্নামে।কিন্তু কেনো? এখানে মানুষের তো কোন হাত নেই।ম্যানুয়ালটা স্রষ্টার তৈরি। আমরা তো জাষ্ট পারফর্মার।স্ক্রিপ্ট রাইটার তো স্রষ্টা।স্রষ্টা এরজন্য আমাদের কাউকে জান্নাত,কাউকে জাহান্নাম দিতে পারেন না। যুক্তি তাই বলে,ঠিক?’
আমি চুপ করে রইলাম। পুরো ক্লাশে পিনপতন নিরবতা বিরাজ করছে তখন।
স্যার বললেন,- ‘হ্যাভ ইউ এ্যানি প্রপার লজিক অন দ্যাট টিপিক্যাল কোয়েশ্চান,ডিয়ার?’
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলাম।
স্যার মুচকি হাসলেন। মনে হলো- উনি ধরেই নিয়েছেন যে, উনি আমাকে এবার সত্যি সত্যিই কুপোকাত করে দিয়েছেন।বিজয়ীর হাসি।
আমাকে যারা চিনে তারা জানে, আমি কখনো কারো প্রশ্নের উত্তর দিতে সময় নিই না।আজকে যেহেতু তার ব্যতিক্রম ঘটলো, আমার বন্ধুরা আমার দিকে ড্যাব ড্যাব চোখ করে তাকালো।তাদের চাহনি দেখে মনে হচ্ছিলো, এই সাজিদকে তারা চিনেই না।কোনদিন দেখে নি।
আর, ক্লাশে আমার বিরুদ্ধ মতের যারা আছে, তাদের চেহারা তখন মূহুর্তেই উজ্জ্বল বর্ণ ধারন করলো।তারা হয়তো মনে মনে বলতে লাগলো,- ‘মোল্লার দৌঁড় অই মসজিদ পর্যন্তই।হা হা হা’।
আমি মুখ তুলে স্যারের দিকে তাকালাম।মুচকি হাসিটা স্যারের মুখে তখনও বিরাজমান।
আমি বললাম,- ‘স্যার, এই ক্লাশে কার সম্পর্কে আপনার কি অভিমত?’
স্যার ভ্যাবাচ্যাকা খেলেন। স্যার জিজ্ঞেস করেছেন কি আর আমি বলছি কি।
স্যার বললেন,- ‘বুঝলাম না।’
– ‘মানে, আমাদের ক্লাশের কার মেধা কি রকম, সে বিষয়ে আপনার কি ধারনা?’
– ‘ভালো ধারনা। ছাত্রদের সম্পর্কে একজন শিক্ষকেরই তো সবচেয়ে ভালো জ্ঞান থাকে।’
আমি বললাম,- ‘স্যার, আপনি বলুন তো, এই ক্লাশের কারা কারা ফাষ্ট ক্লাশ আর কারা কারা সেকেন্ড ক্লাশ পাবে?’
স্যার কিছুটা বিস্মিত হলেন। বললেন,- ‘আমি তোমাকে অন্য বিষয়ে প্রশ্ন করেছি।তুমি ‘আউট অফ কনটেক্সট’ এ গিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করছো,সাজিদ।’
– ‘না স্যার, আমি কনটেক্সটেই আছি। আপনি উত্তর দিন।’
স্যার বললেন,- ‘এই ক্লাশ থেকে রায়হান, মমতাজ, ফারহানা, সজীব, ওয়ারেশ, ইফতি, সুমন,জাবেদ এবং তুমি ফাষ্ট ক্লাশ পাবে। আর বাকিরা সেকেন্ড ক্লাশ।’
স্যার যাদের নাম বলেছেন, তারা সবাই ক্লাশের ব্রিলিয়্যাণ্ট ষ্টুডেণ্ট।সুতরাং, স্যারের অনুমান খুব একটা ভুল না।
আমি বললাম,- ‘স্যার, আপনি এটা লিখে দিতে পারেন?’
– ‘Why not’- স্যার বললেন।
এই বলে তিনি খচখচ করে একটা কাগজের একপাশে যারা ফাষ্ট ক্লাশ পাবে তাদের নাম, অন্যপাশে যারা সেকেন্ড ক্লাশ পাবে,তাদের নাম লিখে আমার হাতে দিলেন।
আমি বললাম,- ‘স্যার, ধরে নিলাম যে আপনার ভবিষ্যৎবাণী সম্পূর্ণ সত্য হয়েছে।মানে, আপনি ফাষ্ট ক্লাশ পাবে বলে যাদের নাম লিখেছেন,তারা সবাই ফাষ্ট ক্লাশ পেয়েছে,আর যারা সেকেন্ড ক্লাশ পাবে লিখেছেন, তাদের সবাই সেকেন্ড ক্লাশ পেয়েছে।’
– ‘হুম, তো?’
– ‘এখন, স্যার বলুন তো, যারা ফাষ্ট ক্লাশ পেয়েছে, আপনি এই কাগজে তাদের নাম লিখেছেন বলেই কি তারা ফাষ্ট ক্লাশ পেয়েছে?’
– ‘নাহ তো।’
– ‘যারা সেকেন্ড ক্লাশ পেয়েছে, তারা সেকেন্ড ক্লাশ পাবে বলে আপনি এই কাগজে লিখেছেন বলেই কি তারা সেকেন্ড ক্লাশ পেয়েছে?’
স্যার বললেন,- ‘একদম না।’
– ‘তাহলে মূল ব্যাপারটি কি স্যার?’
স্যার বললেন,- ‘মূল ব্যাপার হলো, আমি তোমাদের শিক্ষক।আমি খুব ভালো জানি পড়াশুনায় তোমাদের কে কেমন।আমি খুব ভালো করেই জানি, কার কেমন মেধা। সুতরাং, আমি চোখ বন্ধ করেই বলে দিতে পারি কে কেমন রেজাল্ট করবে।’
আমি হাসলাম। বললাম,- ‘স্যার, যারা সেকেন্ড ক্লাশ পেয়েছে, তারা যদি আপনাকে দোষ দেয়? যদি বলে, আপনি ‘সেকেন্ড ক্লাশ’ ক্যাটাগরিতে তাদের নাম লিখেছেন বলেই তারা সেকেন্ড ক্লাশ পেয়েছে?’
স্যার কপালের ভাঁজ লম্বা করে বললেন,- ‘ইট উড বি টোট্যালি বুলশিট! আমি কেন এর জন্য দায়ী হবো? এটা তো সম্পূর্ণ তাদের দায়। আমি শুধু তাদের মেধা,যোগ্যতা সম্পর্কে ধারনা রাখি বলেই অগ্রিম বলে দিতে পেরেছি যে কে কেমন রেজাল্ট করবে।’
আমি আবার জোরে জোরে হাসতে লাগলাম। পুরো ক্লাশ আমার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে।
আমি থামলাম।বললাম,- ‘স্যার, তাকদির তথা ভাগ্যটাও ঠিক এরকম। আপনি যেমন আমাদের মেধা, যোগ্যতা,ক্ষমতা সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখেন, স্রষ্টাও তেমনি তার সৃষ্টি সম্পর্কে ধারনা রাখেন।আপনার ধারনা মাঝে মাঝে ভুল হতে পারে, কিন্তু স্রষ্টার ধারনায় কোন ভুল নেই।স্রষ্টা হলেন আলিমুল গায়েব।তিনি ভূত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ সব জানেন।
আপনি যেরকম আমাদের সম্পর্কে পূর্বানুমান করে লিখে দিয়েছেন যে, আমাদের মধ্যে কারা কারা ফাষ্ট ক্লাশ পাবে, আর কারা সেকেন্ড ক্লাশ।এর মানে কিন্তু এই না যে, আপনি বলেছেন বলে আমাদের কেউ ফাষ্ট ক্লাশ পাচ্ছি, কেউ সেকেন্ড ক্লাশ।
স্রষ্টাও সেরকম পূর্বানুমান করে আমাদের তাকদির লিখে রেখেছেন।তাতে লেখা আছে দুনিয়ায় আমরা কে কি করবো।এর মানেও কিন্তু এই না যে, তিনি লিখে দিয়েছেন বলেই আমরা কাজগুলো করছি।বরং, এর মানে হলো এই- তিনি জানেন যে, আমরা দুনিয়ায় এই এই কাজগুলো করবো।তাই তিনি তা অগ্রিম লিখে রেখেছেন তাকদির হিসেবে।
আমাদের মধ্যে কেউ ফাষ্ট ক্লাশ আর কেউ সেকেন্ড ক্লাশ পাবার জন্য যেমন কোনভাবেই আপনি দায়ী নন, ঠিক সেভাবে, মানুষের মধ্যে কেউ ভালো কাজ করে জান্নাতে, আর কেউ খারাপ কাজ করে জাহান্নামে যাবার জন্যও স্রষ্টা দায়ী নন।স্রষ্টা জানেন যে, আপনি আজ সকালে একজনকে খুন করবেন।
তাই তিনি সেটা আগেই আপনার তাকদিরে লিখে রেখেছেন।এটার মানে এই না যে- স্রষ্টা লিখে রেখেছে বলেই আপনি খুনটি করেছেন।এর মানে হলো- স্রষ্টা জানেন যে,আপনি আজ খুনটি করবেন।তাই সেটা অগ্রিম লিখে রেখেছেন আপনার তাকদির হিসেবে।
স্যার, ব্যাপারটা কি এখন পরিষ্কার?
স্যারের চেহারাটা কিছুটা ফ্যাকাশে মনে হলো। তিনি বললেন,- ‘হুম।’
এরপর স্যার কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন।তারপর বললেন,- ‘আমি শুনেছিলাম তুমি ক’দিন আগেও নাস্তিক ছিলে।তুমি আবার আস্তিক হলে কবে?’
আমি হা হা হা করে হাসলাম। বললাম,- ‘এই প্রশ্নটা কিন্তু স্যার আউট অফ কনটেক্সট।’
এটা শুনে পুরো ক্লাশ হাসিতে ফেঁটে পড়লো।
পিরিওডের একদম শেষদিকে, স্যার আবার আমাকে দাঁড় করালেন।বললেন,- ‘বুঝলাম স্রষ্টা আগে থেকে জানেন বলেই লিখে রেখেছেন।তিনি যেহেতু আগে থেকেই জানেন কে ভালো কাজ করবে আর কে খারাপ কাজ করবে, তাহলে পরীক্ষা নেওয়ার কি দরকার? যারা জান্নাতে যাওয়ার তাদের জান্নাতে, যারা জাহান্নামে যাওয়ার তাদের জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেই তো হতো,তাই না?’
আমি আবার হাসলাম। আমার হাতে স্যারের লিখে দেওয়া কাগজটি তখনও ধরা ছিলো।আমি সেটা স্যারকে দেখিয়ে বললাম,- ‘স্যার, এই কাগজে কারা কারা ফাষ্ট ক্লাশ পাবে, আর কারা কারা সেকেন্ড ক্লাশ পাবে, তাদের নাম লেখা আছে। তাহলে এই কাগজটির ভিত্তিতেই রেজাল্ট দিয়ে দিন।বাড়তি করে পরীক্ষা নিচ্ছেন কেনো?’
স্যার বললেন,- ‘পরীক্ষা না নিলে কেউ হয়তো এই বলে অভিযোগ করতে পারে যে,- ‘স্যার আমাকে ইচ্ছা করেই সেকেন্ড ক্লাশ দিয়েছে।পরীক্ষা দিলে আমি হয়তো ঠিকই ফাষ্ট ক্লাশ পেতাম।’
আমি বললাম,- ‘একদম তাই,স্যার। স্রষ্টাও এইজন্য পরীক্ষা নিচ্ছেন,যাতে কেউ বলতে না পারে- দুনিয়ায় পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলে আমি অবশ্যই আজকে জান্নাতে থাকতাম। স্রষ্টা ইচ্ছা করেই আমাকে জাহান্নামে পাঠিয়েছে।’
ক্লাশের সবাই হাত তালি দিতে শুরু করলো। স্যার বললেন,- ‘সাজিদ, আই হ্যাভ এ্যা লাষ্ট কোয়েশ্চান।’
– ‘ডেফিনেইটলি, স্যার।’- আমি বললাম।
– ‘আচ্ছা, যে মানুষ পুরো জীবনে খারাপ কাজ বেশি করে,সে অন্তত কিছু না কিছু ভালো কাজ তো করে,তাই না?’
– ‘জ্বি স্যার।’
– ‘তাহলে, এই ভালো কাজগুলোর জন্য হলেও তো তার জান্নাতে যাওয়া দরকার,তাই না?’
আমি বললাম,- ‘স্যার, পানি কিভাবে তৈরি হয়?’
স্যার আবার অবাক হলেন। হয়তো বলতে যাচ্ছিলেন যে, এই প্রশ্নটাও আউট অফ কনটেক্সট, কিন্তু কি ভেবে যেন চুপসে গেলেন।বললেন,- ‘দুই ভাগ হাইড্রোজেন আর এক ভাগ অক্সিজেনের সংমিশ্রণে।’
আমি বললাম,- ‘আপনি এক ভাগ হাইড্রোজেন আর এক ভাগ অক্সিজেন দিয়ে পানি তৈরি করতে পারবেন?’
– ‘কখনোই না।’
– ‘ঠিক সেভাবে, এক ভাগ ভালো কাজ আর এক ভাগ মন্দ কাজে জান্নাত পাওয়া যায়না। জান্নাত পেতে হলে হয় তিন ভাগই ভালো কাজ হতে হবে, নতুবা দুই ভাগ ভালো কাজ, এক ভাগ মন্দ কাজ হতে হবে। অর্থাৎ, ভালো কাজের পাল্লা ভারি হওয়া আবশ্যক।’
সেদিন আর কোন প্রশ্ন স্যার আমাকে করেন নি।’
এক নিশ্বাঃসে পুরোটা পড়ে ফেললাম।কোথাও একটুও থামিনি। পড়া শেষে যেই মাত্র সাজিদের ডায়েরিটা বন্ধ করতে যাবো, অমনি দেখলাম, পেছন থেকে সাজিদ এসে আমার কান মলে ধরেছে।সে বললো,- ‘তুই তো সাংঘাতিক লেভেলের চোর।’
আমি হেসে বললাম,- ‘হা হা হা। স্যারকে তো ভালো জব্দ করেছিস ব্যাটা।’
কথাটা সে কানে নিলো বলে মনে হলো না।নিজের সম্পর্কে কোন কমপ্লিমেন্টই সে আমলে নেয় না। গামছায় মুখ মুছতে মুছতে সে খাটের উপর শুয়ে পড়লো।
আমি তার কাঁধে হাত রাখলাম। বললাম,- ‘সাজিদ……’
– ‘হু’
– ‘একটা কথা বলবো?’
– ‘বল।’
– ‘জানিস, একসময় যুবকেরা হিমু হতে চাইতো।হলুদ পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে, মরুভূমিতে গর্ত খুঁড়ে জ্যোৎস্না দেখার স্বপ্ন দেখতো।দেখিস,এমন একদিন আসবে, যেদিন যুবকেরা সাজিদ হতে চাইবে। ঠিক তোর মতো……’
এই বলে আমি সাজিদের দিকে তাকালাম।দেখলাম, ততক্ষণে সে ঘুমিয়ে পড়েছে। অঘোর ঘুম……..//
এই অধ্যায় লেখক কুরানের কথার উল্টা কথাকে কুরানের নামে চালানোর এবং ভবিষ্যত সম্পর্কে সর্বদ্রষ্টা না, অনুমানের ভিত্তিতে চলা মানুষ (স্যার) এর সাথে সর্বদ্রষ্টা আল্লাহ এর তুলনা করে "মিল" দেখিয়েছে। এটা ১০০% শিরক। আর কুরানের কোন কথাকে বিকৃত করলো? কুরানে একাধিক আয়াত এবং হাদিসে লেখা যে আল্লাহ সবকিছু, এমনকি আখিরাতে কে কোন অবস্থানে যাবে, ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি ৬, বিকাল ৪:৩২ মিনিটে কি করেছি, তাসহ লিখে রেখেছে ও তার একচুল নড়বড় হবেনা, এই হিসাবে স্বাধীন ইচ্ছার অস্তিত্ব নেই। নেই!!!!
প্রমান করো যে হা-জাত যা লিখেছে তাই সত্য এবং আসলে সে কুরান বিকৃতি ও শিরকি করেনি।

প্যারাডকসিকাল সাজিদের জবাব-৬

পেরা সাজিদ ৬ নাম্বার চেপটারের জবাব। সবার কাছে চ্যালেঞ্জ এর চেয়ে উন্নততর জবাব তৈরির।
//মফিজুর রহমান স্যার। এই ভদ্রলোক ক্লাশে আমাকে উনার শত্রু মনে করেন। ঠিক শত্রু না, প্রতিদ্বন্দ্বী বলা যায়।
আমাকে নিয়ে উনার সমস্যা হলো- উনি উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বলে, ক্লাশের ছেলে-মেয়েদের মনে ধর্ম, ধর্মীয় কিতাব, আল্লাহ, রাসূল ইত্যাদি
নিয়ে সন্দেহ ঢুকিয়ে দেবার চেষ্টা করেন।কিন্তু, আমি প্রতিবারই উনার এহেন কাজের প্রতিবাদ করি।উনার যুক্তির বীপরিতে যুক্তি দিই। এমনও হয়েছে, যুক্তিতে আমার কাছে পরাজিত হয়ে উনি ক্লাশ থেকেও চলে গিয়েছিলেন কয়েকবার।
এই কারনে এই বামপন্থি লোকটা আমাকে উনার চক্ষুশূল মনে করেন।
সে যাকগে! আজকের কথা বলি।
আজকে ক্লাশে এসেই ভদ্রলোক আমাকে খুঁজে বের করলেন। বুঝতে পেরেছি, নতুন কোন উছিলা খুঁজে পেয়েছে আমাকে ঘায়েল করার।
ক্লাশে আসার আগে মনে হয় পান খেয়েছিলেন। ঠোঁটের এক কোণায় চুন লেগে আছে।
আমাকে দাঁড় করিয়ে বড় বড় চোখ করে বললেন,- ‘বাবা আইনষ্টাইন, কি খবর?’
ভদ্রলোক আমাকে তাচ্ছিল্য করে ‘আইনষ্টাইন’ বলে ডাকেন। আমাকে আইনষ্টাইন ডাকতে দেখে উনার অন্য শাগরেদবৃন্দগণ হাসাহাসি শুরু করলো।
আমি কিছু না বলে চুপ করে আছি। তিনি আবার বললেন,- ‘শোন বাবা আইনষ্টাইন, তুমি তো অনেক বিজ্ঞান জানো, বলো তো দেখি, সূর্য কি পানিতে ডুবে যায়?’
ক্লাশ স্তিমিত হয়ে গেলো। সবাই চুপচাপ।
আমি মাথা তুলে স্যারের দিকে তাকালাম। বললাম,- ‘জ্বি না স্যার। সূর্য কখনোই পানিতে ডুবে না।’
স্যার অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে বললেন,- ‘ ডুবে না? ঠিক তো?’
– ‘জ্বি স্যার।’
– ‘তাহলে সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয় কেন হয় বাবা? বিজ্ঞান কি বলে?’
আমি বললাম, – ‘স্যার, সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘুরে।সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরার সময়, পৃথিবী গোলার্ধের যে অংশটা সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, সে অংশে তখন সূর্যোদয় হয়, দিন থাকে। ঠিক একইভাবে, পৃথিবী গোলার্ধের যে অংশটা তখন সূর্যের বীপরিত দিকে মুখ করে থাকে, তাতে তখন সূর্যাস্ত হয়, রাত নামে।আদতে, সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয় বলে কিছু নেই।সূর্য অস্তও যায় না। উদিতও হয়না। পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারনে আমাদের এমনটি মনে হয়।’
স্যার বললেন,- ‘বাহ! সুন্দর ব্যাখ্যা।’
উনি আমার দিকে ঝুঁকে এসে বললেন,- ‘তা বাবা, এই ব্যাপারটার উপর তোমার আস্থা আছে তো? সূর্য পানিতে ডুবে-টুবে যাওয়া তে বিশ্বাস-টিশ্বাস করো কি?’
পুরো ক্লাশে তখনও পিনপতন নিরবতা।
আমি বললাম,- ‘না স্যার। সূর্যের পানিতে ডুবে যাওয়া-টাওয়া তে আমি বিশ্বাস করিনা।’
এরপর স্যার বললেন,- ‘বেশ! তাহলে ধরে নিলাম, আজ থেকে তুমি আর কোরআনে বিশ্বাস করো না।’
স্যারের কথা শুনে আমি খানিকটা অবাক হলাম।পুরো ক্লাশও সম্ভবত আমার মতোই হতবাক।স্যার মুচকি হেসে বললেন,- ‘তোমাদের ধর্মীয় কিতাব, যেটাকে আবার বিজ্ঞানময় বলে দাবি করো তোমরা, সেই কোরআনে আছে, সূর্য নাকি পানিতে ডুবে যায়। হা হা হা।’
আমি স্যারের মুখের দিকে চেয়ে আছি। স্যার বললেন, – ‘কি বিশ্বাস হচ্ছে না তো? দাঁড়াও, পড়ে শোনাই।’
এইটুক বলে স্যার কোরআনের সূরা কাহাফের ৮৬ নাম্বার আয়াতটি পড়ে শোনালেন-
‘(চলতে চলতে) এমনিভাবে তিনি (জুলকারনাঈন) সূর্যের অস্তগমনের জায়গায় গিয়ে পৌঁছুলেন, সেখানে গিয়ে তিনি সূর্যকে (সাগরের) কালো পানিতে ডুবে যেতে দেখলেন।তার পাশে তিনি একটি জাতিকেও (বাস করতে) দেখলেন, আমি বললাম, হে জুলকারনাঈন! (এরা আপনার অধীনস্ত),আপনি
ইচ্ছা করলে (তাদের) শাস্তি দিতে পারেন, অথবা তাদের আপনি সদয়ভাবেও গ্রহণ করতে পারেন।’
এরপর বললেন,- ‘দেখো, তোমাদের বিজ্ঞানময় ধর্মীয় কিতাব বলছে যে, সূর্য নাকি সাগরের কালো পানিতে ডুবে যায়। হা হা হা। বিজ্ঞানময় কিতাব বলে কথা।’
ক্লাশের কেউ কেউ, যারা স্যারের মতোই নাস্তিক, তারা হো হো করে হেসে উঠলো। আমি কিছুই বললাম না।চুপ করে ছিলাম।’

এইটুকুই লেখা। আশ্চর্য! সাজিদ মফিজুর রহমান নামের এই ভদ্রলোকের কথার কোন প্রতিবাদ করলো না? সে তো এরকম করে না সাধারণত। তাহলে কি…….? আমার মনে নানা ধরনের প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দিতে লাগলো সেদিন।

এর চারমাস পরের কথা।
হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় সাজিদ আমাকে এসে বললো,- ‘আগামিকাল ডিপার্টমেণ্ট থেকে ট্যুরে যাচ্ছি। তুইও সাথে যাচ্ছিস।’
আমি বললাম, – ‘আমি? পাগল নাকি? তোদের ডিপার্টমেন্ট ট্যুরে আমি কিভাবে যাবো?’
– ‘সে ভাবনাটা আমার। তুকে যা বললাম, জাষ্ট তা শুনে যা।’
পরদিন সকাল বেলা বেরুলাম।তার ফ্রেন্ডদের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিলো সাজিদ।স্যারেরাও আছেন। মফিজুর রহমান নামের ভদ্রলোকটির সাথেও দেখা হলো। বিরাট গোঁফওয়ালা। এই লোকের পূর্বপুরুষ সম্ভবত ব্রিটিশদের পিয়নের কাজ করতো।
যাহোক, আমরা যাচ্ছি বরিশালের কুয়াকাটা।
পৌঁছাতে পাক্কা চারঘণ্টা লাগলো।
সারাদিন অনেক ঘুরাঘুরি করলাম। স্যারগুলোকে বেশ বন্ধুবৎসল মনে হলো।
ঘড়িতে সময় তখন পাঁচটা বেজে পঁচিশ মিনিট। আমরা সমুদ্রের কাছাকাছি হোটেলে আছি।আমাদের সাথে মফিজুর রহমান স্যারও আছেন।
তিনি সবার উদ্দেশ্যে বললেন,- ‘গাইজ, বি রেডি! আমরা এখন কুয়াকাটার বিখ্যাত সূর্যাস্ত দেখবো।তোমরা নিশ্চয় জানো, এটি দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সমুদ্র সৈকত, যেখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়।’
আমরা সবাই প্রস্তুত ছিলাম আগে থেকেই। বেরুতে যাবো, ঠিক তখনি সাজিদ বলে বসলো,- ‘স্যার, আপনি সূর্যাস্ত দেখবেন?’
স্যার বললেন,- ‘Why not! How can I miss such an amazing moment?’
সাজিদ বললো,- ‘স্যার, আপনি বিজ্ঞানের মানুষ হয়ে খুব অবৈজ্ঞানিক কথা বলছেন। এমন একটি জিনিস আপনি কি করে দেখবেন বলছেন, যেটা আদতে ঘটেই না।’
এবার আমরা সবাই অবাক হলাম।যে যার চেয়ার টেনে বসে পড়লাম। সাজিদ দাঁড়িয়ে আছে।
স্যার কপালের ভাঁজ দীর্ঘ করে বললেন,- ‘What do u want to mean?’
সাজিদ হাসলো। হেসে বললো,- ‘স্যার, খুবই সোজা। আপনি বলছেন, আপনি আমাদের নিয়ে সূর্যাস্ত দেখবেন। কিন্তু স্যার দেখুন, বিজ্ঞান বুঝে এমন লোক মাত্রই জানে, সূর্য আসলে অস্ত যায়না। পৃথিবী গোলার্ধের যে অংশ সূর্যের বীপরিত মুখে অবস্থান করতে শুরু করে, সে অংশটা আস্তে আস্তে অন্ধকারে ছেঁয়ে যায় কেবল। কিন্তু সূর্য তার কক্ষপথেই থাকে।উঠেও না, ডুবেও না। তাহলে স্যার, সূর্যাস্ত কথাটা তো ভুল, তাই না?’
এবার আমি বুঝে গেছি আসল ব্যাপার। মজা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।
মফিজুর রহমান নামের লোকটা একরাশ বিরক্তি নিয়ে বললো,- ‘দেখো সাজিদ, সূর্য যে উদিত হয়না আর অস্ত যায়না, তা আমি জানি। কিন্তু, এখান থেকে দাঁড়ালে আমাদের কি মনে হয়? মনে হয়, সূর্যটা যেনো আস্তে আস্তে পানির নিচে ডুবে যাচ্ছে।এটাই আমাদের চর্মচক্ষুর সাধারণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। তাই, আমরা এটাকে সিম্পলি, ‘সূর্যাস্ত’ নাম দিয়েছি।বলার সুবিধের জন্যও এটাকে ‘সূর্যাস্ত’ বলাটা যুক্তিযুক্ত। দেখো, যদি আমি বলতাম,- ‘ছেলেরা, একটুপর পৃথিবী গোলার্ধের যে অংশে বাংলাদেশের অবস্থান, সে অংশটা সূর্যের ঠিক বীপরিত দিকে মুখ নিতে চলেছে। তারমানে, এখানে এক্ষুনি আঁধার ঘনিয়ে সন্ধ্যা নামবে।আমাদের সামনে থেকে সূর্যটা লুকিয়ে যাবে।চলো, আমরা সেই দৃশ্যটা অবলোকন করে আসি’,
আমি যদি এরকম বলতাম, ব্যাপারটা ঠিক বিদঘুটে শোনাতো। ভাষা তার মাধুর্যতা হারাতো।শ্রুতিমধুরতা হারাতো। এখন আমি এক শব্দেই বুঝিয়ে দিতে পারছি আমি কি বলতে চাচ্ছি, সেটা।’
সাজিদ মুচকি হাসলো। সে বললো,- ‘স্যার, আপনি একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ। বিজ্ঞান পড়েন, বিজ্ঞান পড়ান। আপনি আপনার সাধারন চর্মচক্ষু দিয়ে দেখতে পান যে- সূর্যটা ডুবে যাচ্ছে পানির নিচে। এই ব্যাপারটাকে আপনি সুন্দর করে বোঝানোর জন্য যদি ‘সূর্যাস্ত’ নাম দিতে পারেন, তাহলে সূরা কাহাফে জুলকারনাঈন নামের লোকটি এরকম একটি সাগর পাড়ে এসে যখন দেখলো- সূর্যটা পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে, সেই ঘটনাকে যদি আল্লাহ তা’য়ালা সবাইকে সহজে বুঝানোর জন্য, সহজবোধ্য করার জন্য, ভাষার শ্রুতিমধুরতা ধরে রাখার জন্য, কুলি থেকে মজুর, মাঝি থেকে কাজি, ব্লগার থেকে বিজ্ঞানি,ডাক্তার থেকে ইঞ্জিনিয়ার, ছাত্র থেকে শিক্ষক, সবাইকে সহজে বুঝানোর জন্য যদি বলেন- ‘
‘(চলতে চলতে) এমনিভাবে তিনি (জুলকারনাঈন) যখন সূর্যের অস্তগমনের জায়গায় গিয়ে পৌঁছুলেন, সেখানে গিয়ে তিনি সূর্যকে (সাগরের) কালো পানিতে ডুবে যেতে দেখলেন’,
তখন কেনো স্যার ব্যাপারটা অবৈজ্ঞানিক হবে? কোরান বলেনা যে, সূর্য পানির নিচে ডুবে গেছে। কোরান এখানে ঠিক সেটাই বলেছে, যেটা জুলকারনাঈন দেখেছে, এবং বুঝেছে। আপনি আমাদের সূর্যাস্ত দেখাবেন বলছেন মানে এই না যে- আপনি বলতে চাচ্ছেন সূর্যটা আসলেই ডুবে যায়।আপনি সেটাই বোঝাতে চাচ্ছেন, যেটা আমরা বাহ্যিকভাবে দেখি।তাহলে, একই ব্যাপার আপনি পারলে, কোরান কেন পারবে না স্যার?
আপনারা কথায় কথায় বলেন,- ‘The Sun rises in the east & sets in the west’ এগুলা নাকি Universal Truth..
কিভাবে এগুলো চিরন্তন সত্য হয় স্যার, যেখানে সূর্যের সাথে উঠা-ডুবার কোন সম্পর্কই নাই?
কিন্তু এগুলো আপনাদের কাছে অবৈজ্ঞানিক নয়। আপনারা কথায় কথায় সূর্যোদয়, সূর্যাস্তের কথা বলেন। অথচ, সেইম কথা কোরান বললেই আপনারা চিৎকার করে বলে উঠেন- কোরান অবৈজ্ঞানিক। কেন স্যার?’
সাজিদ একনাগাড়ে এতসব কথা বলে গেলো। স্যারের মুখটা কিছুটা পানসে দেখা গেলো। তিনি বললেন,- ‘দীর্ঘ চারমাস ধরে, এরকম সুযোগের অপেক্ষা করছিলে তুমি, মি. আইনষ্টাইন?’
আমরা সবাই হেসে দিলাম।
সাজিদও মুচকি হাসলো। বড় অদ্ভুত সে হাসি।।//
পুরাটাই মিথ্যা। প্রথমেই "বামপন্থী নাস্তিক যে হারে" এরকম একটা ফিকশন এনে তা দিয়ে পাঠকের মনকে ইসলামমুখী করানোর কুমির রচনা। তারপরে শুরু কুরানের ভুল অনুবাদ। যে আয়াতের কথা বলা হলো, সেটার আসল অনুবাদ abdullah yusuf ali original বা william pickthall বা আরবি ভাষার নেটিভরা কি অনুবাদ করবে, সেটার সাথে মিলিয়ে দেখুক। প্রমান করুক যে হা-রিপের অনুবাদটা সঠিক, বাকিসব ভুয়া। এরপরে আরো শুরু হলো দিক অর্থাৎ cardinal point শিখাতে বানানো উদাহরনকে আসল উদাহরন হিসাবে ব্যবহারের জোচ্চুরি। হা-রিপ গ্রুপ এটা বুঝতে অক্ষম যে দিকগুলো মানুষের বানানো নাম এবং সেগুলো ব্যবহার করা হয় দিক বুঝাাতে যাতে করে এরকম ঘটনা না হয় যে হা-রিপ যেটাকে পূর্ব বলে, সৈকত সেটাকে দক্ষিন বলে। কুরানের ঐ আয়াতের অনুবাদে কোনো জায়গায় "মনে হলো ডুবছে" নেই সবখানেই আছে "অস্তাচলে গিয়ে ডুবতে দেখলেন"। go ahead, learn original arabic and translate yourself.
additionally, সহীহ বুখারী volume 4, book 52, hadith 54 এ লেখা সুর্য প্রতিদিন অস্ত যাবার পরে আল্লার আরশের তলায় গিয়ে সারারাত সিজদা দেয়। তার মনে পৃথিবীর অপরপ্রান্তে থাকা সুর্যটি TARDIS (ডক্টর হু এর ফ্যানরা কথাটা কোন পর্ব থেকে নেওয়া, তা বুঝবেন)

প্যারাডকসিকাল সাজিদের জবাব-৫

পেরা সাজিদ ৫ নাম্বার চেপটারের জবাব। সবার কাছে চ্যালেঞ্জ এর চেয়ে উন্নততর জবাব তৈরির।
//স্যার বলেই যাচ্ছেন ধর্ম আর স্রষ্টার অসারতা নিয়ে।

এবার সাজিদ দাঁড়ালো। স্যারের কথার মাঝে সে বললো,- ‘স্যার, সৃষ্টিকর্তা একচোখা নন। তিনি মানুষের ভালো কাজের ক্রেডিট নেন না। তিনি ততোটুকুই নেন, যতোটুকু তিনি পাবেন।ইশ্বর আছেন।’
স্যার সাজিদের দিকে একটু ভালোমতো তাকালেন।বললেন,- ‘শিওর?’
– ‘জ্বি।’
– ‘তাহলে মানুষের মন্দ কাজের জন্য কে দায়ী?’
– ‘মানুষই দায়ী।- সাজিদ বললো।
– ‘ভালো কাজের জন্য?’
– ‘তাও মানুষ।’
স্যার এবার চিৎকার করে বললেন,- ‘এক্সাক্টলি, এটাই বলতে চাচ্ছি। ভালো/মন্দ এসব মানুষেরই কাজ।সো, এর সব ক্রেডিটই মানুষের।এখানে স্রষ্টার কোন হাত নেই। সো, তিনি এখান থেকে না প্রশংসা পেতে পারেন, না তিরস্কার।সোজা কথায়, স্রষ্টা বলতে কেউই নেই।’
ক্লাশে পিনপতন নিরবতা। সাজিদ বললো,- ‘মানুষের ভালো কাজের জন্য স্রষ্টা অবশ্যই প্রশংসা পাবেন, কারন, মানুষকে স্রষ্টা ভালো কাজ করার জন্য দুটি হাত দিয়েছেন, ভালো জিনিস দেখার জন্য দুটি চোখ দিয়েছেন, চিন্তা করার জন্য মস্তিষ্ক দিয়েছেন, দুটি পা দিয়েছেন। এসবকিছুই স্রষ্টার দান।তাই ভালো কাজের জন্য তিনি অবশ্যই প্রশংসা পাবেন।’
স্যার বললেন,- ‘এই গুলো দিয়ে তো মানুষ খারাপ কাজও করে, তখন?’
– ‘এর দায় স্রষ্টার নয়।’
– ‘হা হা হা হা। তুমি খুব মজার মানুষ দেখছি।হা হা হা হা।’//
এবার লেখক কুরান ও হাদিসের উল্টাকথা বলা শুরু করলো। যেখানে কুরান ও হাদিসে আরবি ভাষায় স্পষ্ট করে লিখা যে মানুষ যা কিছু করে, সবকিছু আল্লাহর দিয়ে নির্ধারিত এবং একচুলও হেরফের নাই, গাছের পাতা পর্যন্ত, সেখানে সাজিদকে দিয়ে বলাচ্ছে যে মানুষের ভালো কাজের জন্য স্রষ্টা প্রশংসা পাবে কিন্তু খারাপ কাজের জন্য স্রষ্টার দায় নাই। একেতো ইসলামধর্মের বিকৃতি, তার উপরে দ্বিমুখী নীতি, the paradox of law যে "ভালো কাজ আমি করলে সব প্রশংসা আমার কিন্তু খারাপ কাজ আমি করলেও দায় আমার না।" ঠিক কোন পর্যায়ে মুসলমানদের এখন নামতে হচ্ছে স্বয়ং কুরানের উল্টা কথাকে ইসলাম নামে চালাতে।
//সাজিদ বললো,- ‘স্যার, স্রষ্টা মানুষকে একটি স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন।এটা দিয়ে সে নিজেই নিজের কাজ ঠিক করে নেয়। সে কি ভালো করবে, না মন্দ।’
স্যার তিরস্কারের সুরে বললেন, – ‘ধর্মীয় কিতাবাদির কথা বাদ দাও,ম্যান। কাম টু দ্য পয়েণ্ট এন্ড বি লজিক্যাল।’//
অথচ কুরান তো বলে যে মানুষ যা কিছু করেছে, করছে ও করবে, সব আল্লাহ নির্ধারন করে দিয়েছে ও স্বাধীন ইচ্ছা বলে কিছু নেই।
(ব্যাকগ্রাউন্ডে মিস্টার বিনের হাসির সাউন্ডট্র্যাক বাজবে)

বিবর্তন নিয়ে মিথ্যাচার ধরে আমার জবাব

Rajnikanth Reddy এর পুরাতন পরিকল্পনা ও আমার বর্তমান চেষ্টাতে মুমিনবানির জবাবে তৈরি আরেক কপিপেস্ট। এটা ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে কয়েকজনের মাধ্যমে ব্যবহার হতে দেখেছেন, তাদের ক্রেডিট আছে এটা তৈরিতে, আমি এটাতে কিছু পরিবর্তন এনেছি। বিবর্তন নিয়ে মুমিনদের মিথ্যাচারের জবাবে এটি।
ইসলামধর্ম বিবর্তনকে মিথ্যা বলে। বিবর্তন বলে যে কার্বনের সাথে কার্বন মিলে তৈরি হওয়া লং চেইন ও তাতে হাইড্রোজেন অক্সিজেন নাইট্র্রোজেন যুক্ত হয়ে তৈরি হওয়া জৈব যৌগের রাসায়নিক বন্ধন পরিবেশ অনুযায়ী বদল হয় ও তার ফলে জীবের জিনেটিক কোড বংশ থেকে বংশে বদলায়। উল্লেখ্য যে মুমিনরা ছবি স্প্যাম করে যে ছবিতে দেখায় যে বিবর্তনের ফলে এক প্রানি থেকে আরেক প্রানি বংশগতভাবে তৈরি হওয়াটা হচ্ছে অনেকগুলো ভাংগা বা স্ক্র্যাপ ধাতু থেকে কম্পিউটার তৈরি হয়ে যাবার মত, যা সম্পূর্ণ ভুল তুলনা।
ভুল তুলনা এজন্য যে স্ক্র্যাপ ধাতুর উপাদান অ্যালুমিনিয়াম কপার আয়রন এসব মৌলের মধ্যে catenation ক্যাটেনেশন নামক বৈশিষ্ট্যটি নেই, কেবল কারবনের মধ্যে ক্যাটেনেশন আছে যার ফলে কার্বন কার্বন জোড়া লেগে লম্বা চেইন অণু তৈরি হতে পারে যাদের সাথে উপরে বর্নীত মৌল মিলে জৈব যৌগ তৈরি হয়। প্রথমেই মগজে এটা ঢুকাতে হবে।
যারা বলে বিবর্তনবাদ মিথ্যাচার, তাদের এটা দেখা উচিত যে পৃথিবীর তাবৎ নদী ও সমুদ্রে সব জীবের যত বর্জ্য ও মৃতদেহ যায়, তা পরিবেশ অনুযায়ী ভেঙ্গে অ্যামিনো অ্যাসিডে পরিনত হয় ও সে অ্যামিনো অ্যাসিড যুক্ত হয়ে সরল প্রান তথা জীবানুগুলো তৈরি হয়, যেগুলো সব মাছের খাবার হয়, আবার এসব জীবানুগুলো তাদের বিবর্তন হয়ে জটিলতর জীবানু ও প্রানিতে পরিনত হয়, যা প্রতিদিন প্রতিমুহুর্তেই ঘটছে। কোন সমুদ্র ও নদীতে কতটুকু জীবানু আছে তা সে জায়গার উর্বরতা মানে কত পরিমান মাছের খাদ্য আছে, তার একটা হিসাব যেটা মেরিন বায়োলজি ল্যাবগুলোতে করতেই হয়। তাহলে এবার কি বিবর্তনবিরোধীরা এটাকেও মিথ্যা বলবে? নাকি এই সত্যপ্রচার ঠেকাতে মেরিন বায়োলজি ল্যাবগুলোতে হামলা করবে?
উল্লেখ্য যে বিবর্তন যদি না ঘটতো তাহলে বর্তমান যুগে আদি প্রান জীবানুগুলো আদৌ পাওয়া যেতোনা কারন বিবর্তনে তাদের উৎপত্তিই সবচেয়ে দ্রুতগতিতে হয়।
যারা ছবি দেখিয়ে প্রশ্ন তুলে যে বানর ও মানুষ প্রকৃতিতে এত আছে কেনো যদি বানর থেকে মানুষ হয়, তাদের অবগতির জন্য, বানর থেকে মানুষ হয়নি। এটা হচ্ছে বিবর্তনের বিরুদ্ধে খৃষ্টানদের তৈরিকৃত মিথ্যাচার এবং এটা মুসলমানরা চুরি করেছে তাদের জিহাদের জন্য। বানর ও মানুষ বিবর্তনীয় কাজিন এবং তাদের বিবর্তনীয় কমন পূর্বপুরুষ যে এপ ছিলো সেটা বিলুপ্ত, কেবল ফসিল আছে। আরো বড় কথা হচ্ছে মাঝপথের বহু প্রানির ফসিল তথা transitional fossil বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক থেকে বর্তমান পর্যন্ত আবিস্কার হয়েই যাচ্ছে, মানে মধ্যবর্তী ফসিল না পাওয়ার কথাটিও মিথ্যা।