Thursday, March 9, 2017

প্যারাডকসিকাল সাজিদের জবাব-৩

পেরা সাজিদ ৩ নাম্বার চেপটারের জবাব। সবার কাছে চ্যালেঞ্জ এর চেয়ে উন্নততর জবাব তৈরির।
"সাজিদ বললো,- ‘খালু, ইতিহাস থেকে আমরা আরো জানতে পারি, খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্দশ শতকে চতুর্থ আমেনহোটেপের আগে যেসকল শাসকেরা মিশরকে শাসন করেছে, তাদের সবাইকেই ‘রাজা’ বলে ডাকা হতো। কিন্তু, খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতকে চতুর্থ আমেনহোটেপের পরে যেসকল শাসকেরা মিশরকে শাসন করেছিলো, তাদের সবাইকে ‘ফেরাঊন’ বলে ডাকা হতো। ঈউসুফ আঃ মিশরকে শাসন করেছিলেন খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্দশ শতকের চতুর্থ আমেনহোটেপের আগে।আর, মূসা আঃ মিশরে জন্মলাভ করেছিলেন চতুর্থ আমেনহোটেপের কমপক্ষে আরো দু’শো বছর পরে।অর্থাৎ, মূসা আঃ যখন মিশরে জন্মগ্রহন করেন, তখন মিশরের শাসকদের আর ‘রাজা’ বলা হতো না, ‘ফেরাঊন’ বলা হতো।’
– ‘হুম, তো?’
– ‘কিন্তু খালু, কোরানে ঈউসুফ আঃ এবং মূসা আঃ দুইজনের কথাই আছে। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, কোরান ঈউসুফ আঃ এর বেলায় শাসকদের ক্ষেত্রে ‘রাজা’ শব্দ ব্যবহার করলেও, একই দেশের, মূসা আঃ এর সময়কার শাসকদের বেলায় ব্যবহার করেছে ‘ফিরাঊন’ শব্দটি। বলুন তো খালু, মরুভূমির বালুতে উট চরানো বালক মুহাম্মদ সাঃ ইতিহাসের এই পাঠ কোথায় পেলেন? তিনি কিভাবে জানতেন যে, ঈউসুফ আঃ এর সময়ের শাসকদের ‘রাজা’ বলা হতো, মূসা আঃ সময়কার শাসকদের ‘ফেরাঊন’? এবং, ঠিক সেই মতো শব্দ ব্যবহার করে তাদের পরিচয় দেওয়া হলো?’
মহব্বত আলি নামের ভদ্রলোকটি হো হো হো করে হাসতে লাগলো। বললো,- ‘মূসা আর ঈউসুফের কাহিনী তো বাইবেলেও ছিলো। মুহাম্মদ সেখান থেকে কপি করেছে, সিম্পল।’
সাজিদ মুচকি হেসে বললো,- ‘খালু, ম্যাটার অফ সরো দ্যাট, বাইবেল এই জায়গায় চরম একটি ভুল করেছে। বাইবেল ঈউসুফ আঃ এবং মূসা আঃ দুজনের সময়কার শাসকদের জন্যই ‘ফেরাঊন’ শব্দ ব্যবহার করেছে, যা ঐতিহাসিক ভুল। আপনি চাইলে আমি আপনাকে বাইবেলের ওল্ড টেষ্টামেণ্ট থেকে প্রমান দেখাতে পারি।’
লোকটা কিছুই বললো না। চুপ করে আছে। সম্ভবত, উনার প্রমান দরকার হচ্ছে না।"
এখন হা-রিপ মিথ্যা ইতিহাস শেখানো শুরু করেছে। যেখানে বাস্তব সত্য হলো আমেনহোটেপ এর আগে যত "রাজা" ছিলো, তাদেরকেও ফেরাউন বলে ডাকা হতো। wikipedia article on pharaoh, amenhotep iv পড়ে দেখুন।
মুহাম্মাদ উম্মি ছিলোনা। মুসলমানদের স্বয়ং বুখারি হাদিসই বলে যে মুহাম্মদ চিঠি লিখতো, তাও হুমকিওয়ালা চিঠি, নিজের হাতে। মুসলমানরা কতবড় চুতিয়া হলে হাদিস বিকৃতি করে নিজেদের বাচাতে। বাইবেলিয় জোসেফ (কুরানি ইউসুফ) ও মোজেস (কুরানি মুসা) দুইটার সময়কালই ছিলো ফেরাউন ফারাও বংশের আমল। তাতে কি দাড়ালো? কুরানের ভুল, বাইবেলের বেশি।
"সাজিদ আবার বলতে লাগলো,- ‘খালু, কোরানে একটি সূরা আছে, সূরা আল ফাজর নামে। এই সূরার ৬ নম্বর আয়াতটি এরকম,- ‘তোমরা কি লক্ষ্য করো নি, তোমাদের পালনকর্তা ইরাম গোত্রের সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন?’
এই সূরা ফাজরে মূলত আদ জাতি সম্পর্কে বলা হয়েছে। আদ জাতির আলাপের মধ্যে হঠাৎ করে ‘ইরাম’ নামে একটি শব্দ চলে এলো, যা কেউই জানতো না এটা আসলে কি। কেউ কেউ বললো, এটা আদ জাতির কোন বীর পালোয়ানের নাম, কেউ কেউ বললো, এই ইরাম হতে পারে আদ জাতির শারীরিক কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্য, কারন, এই সূরায় আদ জাতির শক্তিমত্তা নিয়েও আয়াত আছে। মোদ্দাকথা, এই ‘ইরাম’ আসলে কি, সেটার সুস্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা কেউই দিতে পারেনি তখন। এমনকি, গোটা পৃথিবীর কোন ইতিহাসে ‘ইরাম’ নিয়ে কিছুই বলা ছিলো না।
কিন্তু, ১৯৭৩ সালে, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি সিরিয়ায় মাটির নিচে একটি শহরের সন্ধান পায়।এই শহরটি ছিলো আদ জাতিদের শহর। সেই শহরে পাওয়া যায়, সুপ্রাচীন উঁচু উঁচু দালান। এমনকি, এই শহরে আবিষ্কার হয় তখনকার একটি লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরিতে একটি তালিকা পাওয়া যায়। এই তালিকায় তারা যেসকল শহরের সাথে বাণিজ্য করতো, সেসব শহরের নাম উল্লেখ ছিলো।আশ্চর্যজনক হলেও সত্য এই- সেই তালিকায় ‘ইরাম’ নামের একটি শহরের নামও পাওয়া যায়, যেটা আদ জাতিদেরই একটি শহর ছিলো। শহরটি ছিলো একটি পাহাড়ের মধ্যে। এতেও ছিলো সুউচ্চ দালান।
চিন্তা করুন, যে ‘ইরাম’ শব্দের সঠিক ব্যাখ্যা এর পূর্বে তাফসিরকারকরাও করতে পারেনি। কেউ এটাকে বীরের নাম, কেউ এটাকে আদ জাতির শারিরীক বৈশিষ্ট্যের নাম বলে ব্যাখ্যা করেছে,
১৯৭৩ সালের আগে যে ‘ইরাম’ শহরের সন্ধান পৃথিবীর তাবৎ ইতিহাসে ছিলো না, কোন ভূগোলবিদ, ইতিহাসবিদই এই শহর সম্পর্কে কিছুই জানতো না, প্রায় ৪৩ শত বছর আগের আদ জাতিদের সেই শহরের নাম কিভাবে কোরান উল্লেখ করলো? যেটা আমরা জেনেছি ১৯৭৩ সালে, সেটা মুহাম্মদ সাঃ কিভাবে আরবের মরুভূমিতে বসে ১৪০০ বছর আগে জানলো? হাউ পসিবল? তিনি তো অশিক্ষিত ছিলেন।কোনদিন ইতিহাস বা ভূগোল পড়েন নি। কিভাবে জানলেন, খালু?’"
আরো মিথ্যা ইতিহাস। এই লেখাতে বর্নীত লাইনগুলি আদৌ সত্য কিনা, তা কেউ নেট সার্চ করে দেখবে না, সবডি অন্ধবিশ্বাসী চুতিয়া বলে। ১৯৭৩ সালের বর্নীত ঘটনাটি আদৌ ঘটেইনি। মিথ্যুকের মিথ্যাচার। আদ জাতির ইতিহাস, ইংলিশ উইকিপিডিয়ায় দ্রষ্টব্য। উইকি ও সমগ্র নেটের তাবৎ গবেষনা সাইটে ইরাম ও আদের ব্যাপারে এই জিওগ্রাফিক ঘটনার কোনো উল্লেখই নেই। এত মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে জাতি কি করবে?

1 comment: