Thursday, March 9, 2017

প্যারাডকসিকাল সাজিদের জবাব-৪

পেরা সাজিদ ৪ নাম্বার চেপটারের জবাব। সবার কাছে চ্যালেঞ্জ এর চেয়ে উন্নততর জবাব তৈরির।
"সাজিদ বললো,- ‘যে মূহুর্তে আমরা যুক্তির শর্ত ভাঙবো, ঠিক সেই মূহুর্তে যুক্তি আর যুক্তি থাকবে না।যেটা তখন হবে কু-যুক্তি। ইংরেজিতে বলে- logical fallacy. সেটা তখন আত্মবিরোধের জন্ম দেবে, বুঝেছেন?’
– ‘হ্যাঁ।’- লোকটা বললো।
– ‘আপনি প্রশ্ন করেছেন স্রষ্টার শক্তি নিয়ে। তার মানে, প্রাথমিকভাবে আপনি ধরে নিলেন যে, একজন স্রষ্টা আছেন, রাইট?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘এখন স্রষ্টার একটি অন্যতম গুণ হলো- তিনি অসীম, ঠিক না?’
– ‘হ্যাঁ, ঠিক।’
– ‘এখন আপনি বলেছেন, স্রষ্টা এমনকিছু বানাতে পারবে কিনা, যেটা স্রষ্টা তুলতে পারবে না। দেখুন, আপনি নিজেই বলেছেন, এমনকিছু, আই মিন something, রাইট?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘আপনি ‘এমনকিছু’ বলে আসলে জিনিসটার একটা আকৃতি, শেইপ,আকার বুঝিয়েছেন, তাই না? যখনই something ব্যবহার করেছেন, তখন মনে মনে সেটার একটা শেইপ আমরা চিন্তা করি, করি না?’
– ‘হ্যাঁ, করি।’
– ‘আমরা তো এমন কিছুকেই শেইপ বা আকার দিতে পারি, যেটা আসলে সসীম, ঠিক?’
– ‘হ্যাঁ, ঠিক।’
– ‘তাহলে এবার আপনার প্রশ্নে ফিরে যান। আপনি ধরে নিলেন যে স্রষ্টা আছে।স্রষ্টা থাকলে তিনি অবশ্যই অসীম।এরপর আপনি তাকে এমন কিছু বানাতে বলছেন যেটা সসীম।যেটার নির্দিষ্ট একটা মাত্রা আছে,আকার আছে,আয়তন আছে। ঠিক না?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘পরে শর্ত দিলেন, তিনি সেটা তুলতে পারবে না।দেখুন,আপনার প্রশ্নে লজিকটাই ঠিক নেই। একজন অসীম সত্বা একটি সসীম জিনিস তুলতে পারবে না, এটা তো পুরোটাই লজিকের বাইরের প্রশ্ন। খুবই হাস্যকর না? আমি যদি বলি, উসাইন বোল্ট কোনদিনও দৌঁড়ে ৩ মিটার অতিক্রম করতে পারবে না, এটা কি হাস্যকর ধরনের যুক্তি নয়?’
সজিব নামের লোকটা এবার কিছু বললেন না। চুপ করে আছেন।"
গল্পের লাইনগুলোতে বিদ্যমান যুক্তির নামে মিথ্যাচার অর্থাৎ fallacy টা যেহেতু ছাগুরা নিজেরা দেখতে পাবেনা, তাই তাদের জন্য বলে দেওয়া হচ্ছে, লেখক একরকম "চাইপ্পা দৃশ্য স্কৃপ্ট ঠেলা" এর কাজ করলো যেখানে সে এরকম মিথ্যাচার দিতে চাইছে যে অউত্তোলনীয় বস্তু তৈরি করে সেটাকে উত্তোলনের প্রশ্নে বস্তুটার একটা আকার আকৃতি থাকতে হবে, যা বাস্তবে অর্থাৎ চিন্তার জায়গাতে গেলে আদৌ দরকারই না। আকার আকৃতিহীন অউত্তোলনীয় অর্থাৎ এমন বস্তু যার আকার আকৃতি নেই কিন্তু তৈরি করে উত্তোলন করা যাবেনা, তা দিয়েও প্রশ্ন হয়, কিন্তু লেখক আরিফ সেটা বলবেনা কারন সেটা বললে ওর নিজের কুযুক্তি সেখানেই ধরা। OH WAIT, আমি তো ধরা খাইয়েই দিলাম। যুক্তিবিদ্যায় এরকম মিথ্যাবাজিকে বলা হয় false equivalence. পরস্পর বিচ্ছিন্ন অর্থাৎ discrete ব্যাপারকে "পরস্পর সম্পর্কিত তুলনীয়" হিসাবে প্রচার।
"সাজিদ মুচকি হাসলো। বললো,- ‘আসলে সর্বশক্তিমান মানে এই না যে, তিনি যখন যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন।সর্বশক্তিমান মানে হলো- তিনি নিয়মের মধ্যে থেকেই সবকিছু করতে পারেন।নিয়মের বাইরে গিয়ে তিনি কিছু করতে পারেন না।করতে পারেন না বলাটা ঠিক নয়, বলা উচিত তিনি করেন না। এর মানে এই না যে- তিনি সর্বশক্তিমান নন বা তিনি স্রষ্টা নন।
এর মানে হলো এই- কিছু জিনিস তিনি করেন না, এটাও কিন্তু তার স্রষ্টা হবার গুণাবলি। স্রষ্টা হচ্ছেন সকল নিয়মের নিয়ন্ত্রক।এখন তিনি নিজেই যদি নিয়মের বাইরের হন- ব্যাপারটি তখন ডাবলষ্ট্যান্ড হয়ে যায়।স্রষ্টা এরকম নন। তার কিছু বৈশিষ্ট্য আছে।তিনি সেই বৈশিষ্টগুলো অতিক্রম করেন না।সেগুলো হলো তার মোরালিটি।এগুলো আছে বলেই তিনি স্রষ্টা, নাহলে তিনি স্রষ্টা থাকতেন না।’
সাজিদের কথায় এবার আমি কিছুটা অবাক হলাম।আমি জিজ্ঞেস করলাম- ‘স্রষ্টা পারেনা এমন কি কাজ থাকতে পারে?’
সাজিদ আমার দিকে ফিরলো। ফিরে বললো,- ‘স্রষ্টা কি মিথ্যা কথা বলতে পারে? ওয়াদা ভঙ্গ করতে পারে? ঘুমাতে পারে? খেতে পারে?’
আমি বললাম,- ‘আসলেই তো।’
সাজিদ বললো,- ‘এগুলো স্রষ্টা পারেন না বা করেন না।কারন, এগুলা স্রষ্টার গুণের সাথে কন্ট্রাডিক্টরি।কিন্তু এগুলো করেন না বলে কি তিনি সর্বশক্তিমান নন? না। তিনি এগুলো করেন না,কারন, এগুলা তার মোরালিটির সাথে যায় না।’
এবার লোকটি প্রশ্ন করলো,- ‘কিন্তু এমন জিনিস তিনি বানাতে পারবেন না কেন, যেটা তিনি তুলতে পারবেন না?’
সাজিদ বললো,- ‘কারন, স্রষ্টা যদি এমন জিনিস বানান, যেটা তিনি তুলতে পারবেন না- তাহলে জিনিসটাকে অবশ্যই স্রষ্টার চেয়েও বেশি শক্তিশালী হতে হবে।
স্রষ্টা যে মূহুর্তে এরকম জিনিস বানাবেন, সেই মূহুর্তেই তিনি স্রষ্টা হবার অধিকার হারাবেন।তখন স্রষ্টা হয়ে যাবে তারচেয়ে বেশি শক্তিশালী ওই জিনিসটি।কিন্তু এটা তো স্রষ্টার নীতি বিরুদ্ধ। তিনি এটা কিভাবে করবেন?’
লোকটা বললো,- ‘তাহলে এমন জিনিস কি থাকা উচিত নয় যেটা স্রষ্টা বানাতে পারলেও তুলতে পারবে না?’
– ‘এমন জিনিস অবশ্যই থাকতে পারে, তবে যেটা থাকা উচিত নয়, তা হলো- এমন প্রশ্ন।’"
এখন আরিফ আজাদ স্বয়ং কুরান ও হাদিস বিকৃত করে ফেললো তার ইসলামকে প্রচার করতে। যেখানে কুরানে আয়াতই আছে যেখানে আল্লাহ নিজেকে "সর্বোত্তম ধুরন্দরবাজ" হিসাবে ঘোষনা দিয়াছে, আরবি শব্দটার সরাসরি অনুবাদ করলে দাড়ায় "সর্বোত্তম প্রতারক/মিথ্যুক" সেখানে আরিফ প্রচার করছে যে স্রষ্টা বা আল্লাহ সর্বশক্তিমান মানে "এই না যে সে সবকিছু করতে পারবে।" এখানে সে কুরানে বর্নীত এবং কুরানের বাইরে যত ধর্ম ও দর্শন আছে, সব অনুযায়ী সর্বশক্তিমানের যে "সংগা", সেটাই উল্টে ফেলে যা "সর্বশক্তিমান না" তাকে "সর্বশক্তিমান" হিসাব চালাচ্ছে। এখন আরিফ আজাদকে কুরান বিকৃতির দায়ে কেনো কতল করা হবেনা?
"সাজিদ বললো,- ‘ফাইনালি আপনাকে একটি প্রশ্ন করি। আপনার কাছে দুটি অপশান। হয় ‘হ্যাঁ’ বলবেন, নয়তো- ‘না’।আমি আবারো বলছি, হয় হ্যাঁ বলবেন, নয়তো- না।’
লোকটা বললো,- ‘আচ্ছা।’
– ‘আপনি কি আপনার বউকে পেটানো বন্ধ করেছেন?’
লোকটি কিছুক্ষন চুপ মেরে ছিলো।এরপর বললো,- ‘হ্যাঁ।’
এরপর সাজিদ বললো,- ‘তার মানে আপনি একসময় বউ পেটাতেন?’
লোকটা চোখ বড় বড় করে বললো,- আরে, না না।’
এবার সাজিদ বললো,- ‘হ্যাঁ’ নাহলে কি? না?’
লোকটা এবার ‘না’ বললো।’
সাজিদ হাসতে লাগলো। বললো- ‘তার মানে আপনি এখনো বউ পেটান?’
লোকটা এবার রেগে গেলো। বললো,- ‘আপনি ফাউল প্রশ্ন করছেন।আমি কোনদিন বউ পেটায়নি।এটা আমার নীতি বিরুদ্ধ।
সাজিদ বললো,- ‘আপনিও স্রষ্টাকে নিয়ে একটি ফাউল প্রশ্ন করেছেন। এটা স্রষ্টার নীতি বিরুদ্ধ।"
আরো কতবড় মিথ্যাচার ও কথার প্রতারনা, দেখুন। লোকটি বউ কোনোদিন না পেটালে "আপনি বউ পেটানো বন্ধ করেছেন" প্রশ্নের উত্তর হতো "আমি বউ কিবে পিটাতাম?/ বউ পিটানোর কথা কিভাবে আসলো?" সেখানে আরিফের স্কৃপ্টে "আপনি বউ পেটানো বন্ধ করেছেন" প্রশ্নে লোকটি উত্তর দিলো "হ্যা" মানে YES. এবার জিনিসটা এভাবে চিন্তা করেন পাঠকবৃন্দ। আপনারা আমাকে প্রশ্ন করলেন "আমি পর্ন দেখা বন্ধ করেছি কিনা?"। আমি যদি অতীতে পর্ন কোনোদিন না দেখতাম, তাহলে বলতাম "আমি কবে পর্ন দেখতাম?" কিন্তু আমি যদি বলি "হ্যা করেছি।" তার মানে অবশ্যই, ১০০% এটাই যে আমি অতীতে পর্ন দেখতাম,কারন না দেখলে দেখা বন্ধ করার প্রশ্নটাই আসতো না।

1 comment: