Thursday, November 16, 2017

বিজ্ঞান কি?

ধার্মিকরা গালভরা যুক্তি (!) দেয় বিজ্ঞান এত কিছু পারে তাহলে - জীবন সৃষ্টি করতে পারেনা কেন? বিজ্ঞান কেন মৃত্যু রোধ করতে পারে না? আরেকটা কোরান তৈরী করে দেখাতে পারেনা কেন? এই শ্রেণীর জ্ঞানীরা (!) আল্লাহর অসীম ক্ষমতার কাছে বিজ্ঞান নস্যি তা বোঝাতে বলে থাকে - এসব চন্দ্র সূর্য গ্রহ কে সৃষ্টি করেছে?(সৃষ্টির ঘটনা আদৌ ঘটে থাকলে তো) কোরান গবেষণা করেই আধুনিক বিজ্ঞান অগ্রসর হয়। বিজ্ঞান যা বলে কোরান তা ১৪০০ বছর আগে বলে দিয়েছে।
যুক্তিহীন এই মানুষগুলি "বিজ্ঞান বনাম কোরান" প্রশ্নে প্রায়ই যে ভুলটা করে থাকেন তা হচ্ছে বেলতলা (বিজ্ঞান) আর খাটেরতলা (ধর্ম) - এই দুইয়ের মধ্যে যে তুলনাই চলেনা সেটা বুঝতে না পারা। প্রকৃত অর্থে বিজ্ঞান কি তা বুঝতে না পারার ব্যর্থতা। কেন বেলতলাকে বিজ্ঞান আর খাটেরতলাকে ধর্মের সাথে তুলনা দিলাম সে প্রশ্নে পরে আসছি। কেন বিজ্ঞান আর কোরানের তুলনা চলেনা সহজভাবে আগে সেটাই বলি।
কোরান একটি গ্রন্থ বা বই। বিজ্ঞান কোন বই নয়, একটি বিষয়। 
কোরান ধর্ম ভিত্তিক। বিজ্ঞানের ভিত্তি গবেষনা। 
কোরান বিশ্বাস ভিত্তিক। বিজ্ঞান প্রমাণ ভিত্তিক (বিশ্বাস দিয়ে বিজ্ঞান চলে না)। 
কোরান চ্যালেঞ্জ করা নিষেধ। বিজ্ঞান চ্যালেঞ্জ করা যায়।
কথায় আছে ন্যাড়া একবারই বেলতলা যায়। কৌতুক করে বলা হয় ন্যাড়া দুইবার বেলতলা যায় - দ্বিতীয়বার যায় বেল কুড়াতে। বিজ্ঞান এই বেলতলা। ন্যাড়া বা বিজ্ঞানীরা বারবার বেলতলায় ফিরে বিষয়ের মূলে যেতে। যেমন মহাকাশ বিজ্ঞান। কোটি কোটি টাকা এবং মানুষের জীবনদান - এরপরেও থেমে নেই মহাকাশ বিজ্ঞান। অন্যদিকে রাতে না ঘুমিয়ে ট্যাঁ ট্যাঁ করে যে বাচ্চা কেঁদেই চলেছে তাকে বললেই হয় "চুপ করো নাহলে খাটের তলা থেকে বাঘ-ভাল্লুক ভূত-রাক্ষস দৈত্য-দানব এসে কামড়াবে"। বাচ্চা চুপ। শান্তির ঘুম। নামাজ পড়ো, রোজা রাখো নাহলে কবরে শাস্তি, আখিরাতে শাস্তি। সুতরাং নামাজ পড়ে মানসিক শান্তির ঘুম!
জীবন দান বা মৃত্যু প্রতিহত করা বিজ্ঞানের কাজ বলেই বিজ্ঞানের জোরে এত ওষুধ আবিষ্কার। মুসলমান দেশগুলোতে ৭০ এর দশকে ওষুধের সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্তে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রায় হবার সময়ে দেশগুলোর নেংটা হয়ে কান্না দ্রষ্টব্য। তার সাথে কেন জীবনের সৃষ্টি হয়, কিভাবে প্রাণের সৃষ্টি হয় সেই জ্ঞান গবেষণাই বিজ্ঞান। আরেকটা ধর্মগ্রন্থ তৈরী বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য নয়, বরং কোরানে যা আছে রয়েছে তা কতটা সত্য, যৌক্তিক তা যাচাই করে কোন একটি সিধান্তে পৌঁছানোই বিজ্ঞান। কেউ বলে দিলো মৃত্যুর পর আছে পরকাল। মহাম্মদ বলে দিলেন কোরান তার উপরে নাযিল হওয়া খোদার বাণী। মহাআহম্মকের মত তা বিশ্বাস অবিশ্বাস কোনটাই না করে গবেষণার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোই বিজ্ঞান।
আল্লাহর অস্তিত্ব আছে অথবা আল্লাহর অস্তিত্ব নেই প্রমাণ সাক্ষ্য ছাড়া যেকোন একটি বেছে নেয়া বিজ্ঞান নয়। এই মহাবিশ্ব কেউ তৈরী করেছে কি করেনি তা নিয়ে গবেষণা চলছে। বিজ্ঞানের কাছে এই মুহূর্তে এর চূড়ান্ত কোন উত্তর নেই ঠিকই কিন্তু একসময় তা হয়ত পাওয়া যাবে। হয়ত যাবেনা। পঞ্চাশ বছর আগে তো বিজ্ঞান ছিল তাহলে ল্যাপ্টপ, মোবাইল, ফেইসবুক ছিল না কেন? এখন কেন আছে? কারণ বিজ্ঞান একটি চলমান প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি। এই পৃথিবী চন্দ্র সূর্য কিভাবে হল এর উত্তর এখন নেই মানে এই নয় যে মনগড়া কাল্পনিক এক রাম ভগবান ঈশ্বর আল্লাহ তৈরী করে প্রমাণ ছাড়াই বলে দিলাম সবই আল্লাহর সৃষ্টি আর ব্যস হয়ে গেল উত্তর - বিজ্ঞান তা সমর্থন করেনা। বিজ্ঞান চায় প্রমাণ। এখানেই বিশ্বাস বা ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের মূল পার্থক্য!

No comments:

Post a Comment